সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭



ছুঁই যেন শূণ্য দিগন্তে
জোনাকী আক্তার
********************************
আমি চোখ মেলে দেখিনা তোমায় 
বসত যে তোমার কল্পনায়, 
ছুঁতে তোমায়, মনের বেখায়ালে হাত বাড়ালে 
ছুঁই যেন আমি শূণ্য দিগন্তে ।
পথে দেখি অজস্র মানুষ হেঁটে চলে সঙ্গী সাথে
তোমায় ভেবে ছায়াসঙ্গী আমিও চলি সেই পথে
ছুঁতে তোমায়, মনের বেখায়ালে হাত বাড়ালে
ছুঁই যেন আমি শূণ্য দিগন্তে ।
রূপালী চাঁদ আলো ছড়ায় মায়াময় পৃথিবীতে
চাঁদকে তখন তুমি ভেবে গল্প করি সেই রাতে
ছুঁতে তোমায়, মনের বেখায়ালে হাত বাড়ালে 
ছুঁই যেন আমি শূণ্য দিগন্তে ।
একলা বসে আপন মনে ভাবি যখন তোমায়
এই বুঝি পাশে আছো অনন্তকাল ধরে, 
ছুঁতে তোমায়, মনের বেখেয়ালে হাত বাড়ালে
ছুঁই যেন আমি শূণ্য দিগন্তে ।
নেই তো তুমি কোথাও, যত দূরেই দৃষ্টি মেলি
চোখের পাতা ভারি হলে দেখি তোমার প্রতিকৃতি,
ছুঁতে তোমায়, মনের বেখেয়ালে হাত বাড়ালে
ছুঁই যেন আমি শূণ্য দিগন্তে ।

শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৭

মধুমিতা
জোনাকী আক্তার
******************
তোমার ফেরার পথ পানে চেয়ে 
চোখের জলে মুছে যায় চোখের কাজল
জানিনা তুমি কেমন আছো, আছো কোথায় লুকিয়ে... ?
জানো তো আমি, তোমায় ছাড়া অপূর্ণ-অচল ।


ভোর বেলায় পাখির কূজনে ঘুম ভেঙ্গে যায়
অচেতন মন বলে উঠে, এই বুঝি এলে
কষাঘাত করলে সদর দরজায়
নিরাশ হয়ে ফিরি দরজাটুকু মেলে।


বেলা বহে যায়, যায় সূর্যও অস্তাচলে এক সময়
কিন্তু তোমার কোনো পদচিহ্ন পড়েনা
তোমার আমার স্মৃতি জড়ানো এই আঙিনায় ,
আমাকে মধুমিতা বলে আর তো কেউ ডাকেনা ।


অনেক ইচ্ছা করে তোমার হাত ধরে
রেলপথ ধরে হেঁটে হেঁটে দূরের পথ পাড়ি দিতে ,
কিন্তু তুমি যে স্বার্থপরের মত করে
চলে গেলে একাই , পারলে না সাথে নিতে ?


অবুঝ মন বুঝতে চায়না
যে দিয়েছে পাড়ি অজানার পথে
সে যে আর কোনো দিনই ফিরবে না
তার যে আর নেই সখ্যতা কারো সাথে
অন্য কারো জন্য যে তার মন পুড়েনা ।


তাই তোমার প্রতীক্ষাতে থাকি
ফিরবে তুমি একদিন দেখা হবেই ,
সেদিনটাতে হয়তো থাকবেনা দেহে প্রাণ পাখি
আমিও তোমার সাথে যাবোই ।

মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৭


একটা চিন্তা মাথায় বার বার ঘুরপাক খাচ্ছে । কেনো জানি মনে হচ্ছে , আমি তোমাকে কখনোই ভুলে যেতে পারবোনা । সময়ের ব্যস্ততার জন্য হয়তো ভুলে থাকতে পারবো , কিন্তু ভুল করেও ভুলে যেতে পারবোনা । যেদিন তোমাকে শেষ বারের মত বিদায় দিলাম। সেদিন খুব সহজেই বলেছিলাম , আমি পারবো তোমাকে ভুলে যেতে । কারন স্বার্থপর মানুষগুলো কখনো পিছুটান থাকতে নেই । আমিও সেদিন পিছুটান গুলো অবজ্ঞা করেছিলাম । কিন্তু তুমি বলেছিলে, পারবেনা কখনোই আমাকে ভুলে যেতে। আমি তোমার মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষে মিশে গেছি। আমাকে ভুলে যাওয়া অতটা সহজ নয়। সব থেকে বড় কথা , তুমি আমাকে ভালোবাসো । মানুষ সবকিছু ভুলতে পারলেও , তার ভালোবাসাকে ভুলতে পারেনা । কখনোই পারা সম্ভব না। মনে করে দিবে বার বার একাকী বিকেল , মধ্যরাত , ঝুম বৃষ্টি । নীরবে শুনেছিলাম , কোনো মতে চোখের জল লুকিয়ে মিকি হাসি দিয়েছিলাম। তুমি বুঝেছিলে আমার অভিনয়টুকু । কিন্তু তোমার দায়িত্বের কাছে আর তোমার পরিবারের কাছে তুমি ছিলে আবদ্ধ । তোমার হয়তো অনেক কথায় বলার ছিলো । কিন্তু আবেগের কাছে হেরে যাওয়ার ভয়ে পালিয়ে গেলে। হয়তো একা থাকলে তোমার চোখ থেকেও বৃষ্টি নামবে। সবার আড়ালে ঝরবে। ছেলেদের যে কারো সামনে কাঁদতে নেই। নিথর মূর্তির মত চলে যেতে দেখছিলাম , ইচ্ছা করেছিলো শেষবারের মত বলতে love u more than thousands . নাহ , ইচ্ছাগুলোকে দমন করেছিলাম । ভালোবাসি বলার অধিকার তখন থেকেই ছেড়ে দিয়েছি। যখন তোমাকে অন্য পথের পথিক হতে বলেছিলাম। এছাড়া আর কোনো পথই ছিলোনা। তুমি আমি এমন এক নীতির কাছে আবদ্ধ ছিলাম , সেখানে কোনো ভালোবাসার অস্তিত্ব নেই ।আজ জানতে ইচ্ছা করছে , তুমি কি ভালো আছে ? হয়তো তুমি ভালো আছো , ভালোই থেকো ।আর আমি ... , আমার কথা বাদই দিলাম। স্বার্থপরা সব সময় ভালো থাকে । আমিও অনেক ভালো আছি ।
একদিন আমিও জয়ী হবো
জোনাকী আক্তার
*************************
আমি হেরে যাই বার বার
কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতির কাছে ,
কখনো বা সময়ের নিষ্ঠুরতার কাছে
হারতে হারতে পিঠ ঠেকে যায় দেওয়ালে ।
হেরে গিয়েও পরাজয় মানতে শিখিনি
আমার পরাজয়ে যে ফুটে উঠবে
তোমার ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি ,
অবলীলায় সব দু:খ সইতে রাজি
কিন্তু ভালোবাসার মানুষের তাচ্ছিল্যতাকে নয়।
জীবনের পথে হেরে যাওয়ার জন্য তুমিই দায়ী
তাই বলে ভেবোনা তোমাকে দোষী করবো ,
নিজের মত করে আবারো চলবো
সেই পথেই যে পথে কাঁটা বিছানো ,
কষ্ট হবে , দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়াবে
কখনো হোঁচট খেয়ে বসে পরবো
সেই ব্যথায় আর যণ্ত্রনায় কাতরাবো ।
তবুও থেমে যাবো না কখনোই
কারন দমে যাওয়ার পাত্র আমি নই,
আমি দমে গেলে যে............
তোমার ঠোঁটে ফুটে উঠবে তাচ্ছিল্যের হাসি ,
অবলীলায় সব দু:খ সইতে রাজি
কিন্তু ভালোবাসার মানুষের তাচ্ছিল্যতাকে নয় ।
দেখে নিও সব বৈরীকে জয় করে
কাঁটা বিছানো পথ পাড়ি দিয়ে
আমি পৌঁছে যাবো জীবনের পথের শেষ প্রান্তে ,
সেদিন তোমার সমস্ত অস্তিত্ব মন থেকে মুছে ফেলবো
তুমি হবে সেদিন পরাজিত ,
তোমার চোখে মুখে ভেসে ভেসে উঠবে
অনুসোচনা আর পরিতাপের চিহ্ন ,
তখন জয়ের হাসিটা থাকবে আমার ঠোঁটে ।

Image may contain: one or more people, people standing, ocean, sky, outdoor, nature and water
স্তব্দ আমি 
জোনাকী আক্তার

*********
হৃদয়ের বন্ধন তুমি করেছো ছিন্ন
কি এমন ভুল শুধরে নিলেই তো হতো ,
কিন্তু তুমি করলে তারই ভিন্ন
শুধরে নিতে হয়তো কিছু সময় অপব্যয় হতো ।
তখনো আমি ছিলাম স্তব্দ
জমানো কথাগুলো সেদিন আর বলা হয়নি,
আমার কণ্ঠ যে ছিলো বাকরুদ্ধ
পাশের থাকার কথা একবারের জন্যও সেদিন বলতে পারিনি ।
আজও সেই আগের মতই আমি স্তব্ধ
তবে সেদিন আর আজকের মাঝে তফাত্‍ অনেক
সিডরের আঘাতের পর যেমন প্রকৃতি লন্ড ভন্ড
প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়ার পর যেমন-
চারপাশটা স্তব্ধ আর নিস্তেজ হয়ে পড়ে ,
আজ আমি তারই মতই বেঁচে আছি ।
একেই কি বেঁচে বলে ??
হয়তো বলে তা আর আমার জানা নেই
জানতে ইচ্ছা হয়না একবারও ।
শুধু জানতে চাই আর কত কাল
এভাবেই স্তব্দ থাকবো ।
আমি হতে চাই 
জোনাকী আক্তার
************************
আমি গ্রীষ্মের কাঠফাঁটা রোদ্দুরে ছায়া হয়ে
তোমার পাশে সারাটিখন থাকতে চাই,
আমি ক্লান্ত দেহে ফিরবে যখন তালপাতার পাখা হয়ে
তোমার পথের ক্লান্তি দূর করতে চাই ।
আমি বরষায় ফোটা প্ৰথম কদমফুল হয়ে
তোমার ভালোবাসাকে সংবর্ধনা জানাতে চাই ,
আমি রাতের বেলায় মেঘে ঢাকা তারা হয়ে
তোমার সাথে লুকোচুরি খেলতে চাই ।
আমি শরতের ঘুড়ি হয়ে
তোমার হৃদয়ের আকাশে উড়তে চাই ,
মৃদু হাওয়ায় দোলা শুভ্র কাশফুল হয়ে
তোমায় একবার ছুঁতে চাই ।
আমি হেমন্তের ভোরে ফোটা শিউলী হয়ে
তোমার হৃদয়াঙ্গন সুরভিত করতে চাই ,
হিমেল হাওয়ায় ভালোবাসার চাদর হয়ে
তোমার সর্বাঙ্গ জড়িয়ে রাখতে চাই ।
আমি কনকনে শীতের সকালে মিষ্টি রোদ হয়ে
তোমার চারপাশে উষ্ণতায় ভরিয়ে দিতে চাই,
কখনো বা ঘন কুয়াশায় শিশির হয়ে
তোমার অঙ্গন খেলার ছলে ভিজিয়ে দিতে চাই ।
আমি বসন্তের কোকিল হয়ে
তোমার মনে ভালোবাসার গান শুনাতে চাই ,
আমি সাত রঙে সজ্জিত প্রজাপতি হয়ে
তোমার মনের বাগানে ডানা মেলে উড়তে চাই ।
আমি তোমায় বারো মাসে ছয়টি ঋতু হয়ে
সারাটি বছর ভালোবাসতে চাই ।
নির্ঘুম রাত
জোনাকী আক্তার 
______________________

মধ্যরাত চারপাশের কোলাহল থেমে গেছে
দূর থেকে ভেসে ঝিঁঝিপোকার ডাক,
পথে নেই কোনো পথিকের পদচিহ্ন
যে যার আপন নীড়ে ফিরেছে ।
সবাই ঘুমের ঘোরে অচেতন
শুধু আমি একলা জেগে রই ,
রাতজাগা তারাগুলোর সাথে
জোনাকির মিটিমিটি আলো জ্বলা নেভা দেখে ।
জানি তুমিও পাড়ি দিয়েছো ঘুমের দেশে
হয়তো তুমি সুখনিদ্রায় সুখের স্বপ্নে বিমোহিত
কিন্তু স্বপ্ন দেখার ভয়ে
রাতগুলো নির্ঘুম কাটিয়ে দেয় ,
কারন আমি আর কোনো স্বপ্ন দেখতে চাইনা
যদি ঘুমের ঘোর কাটার সাথে
আবারো স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় ।
আমি নতুন করে আর কষ্ট পেতে চাইনা ,
অনেক ঝরেছে চোখের জল
নতুন করে আর চোখের জল ঝরাতে চাইনা ।
যাচ্ছে কেটে এভাবেই কত নির্ঘুম রাত
কেউ রাখেনা তার হিসাব ,
বলেনা কেউ আর শাসনের স্বরে
ঢের হয়েছে রাত আর জেগোনা ।
সময়ের সাথে সাথে সবই বদলে যায়
যেমনটা বদলে গেছো তুমি
এমন কি আমিও বদলে গেছি ,
বদলে গেছে জীবনের দিক ,
সেই সাথে আমি ভাসি চোখের জলে
শুধু তুমিই সুখে থেকো ।
তুমিও পরাজিত
জোনাকী আক্তার
****************
বুঝিনি আগে প্রেম মানে
কষ্ট কে কাছে ডাকা 
দু:খ কে আলিঙ্গন করা ,
তোমার প্রেমে পড়েছি বলেই
আজ জীবন আমার দু:খ-কষ্টে জর্জরিত ।
ভালোবাসার মানে কি তবে
নীরবে চোখের জলে নেয়া যাওয়া ?
তোমায় ভালোবাসার জন্য
আঘাত পেতে হৃদয় ক্ষত বিক্ষত ,
যেনো আমি না জেনে না শুনে
ভিরুলের চাকে দিয়েছি হাত,
সে কারনেই হৃদয়ে বাজে ব্যথার আর্তনাদ ।
আকাশ কুসুম স্বপ্ন দেখালে তুমি
বোকার মত আমি শুধুই দেখে গেলাম ,
যেদিন বুঝলাম সে স্বপ্ন পূরণ হবার নয়
সেদিন থেকে মানতে হলো
কেউ আর কারো নয় ।
তোমার সুনিপুন অভিনয়ের কাছে
আমি বার বার হেরে গিয়েছি,
তুমি জয়ী হয়েছো
কিন্তু ভেবে দেখো ভালোবাসার বিচারে
তুমিই বাজে ভাবে পরাজিত ,
কারন আমার ভালোবাসার মাঝে
কোনো খুঁত তুমি খোঁজে পাবেনা ।
আমাদের ছোট্ট গাঁ
জোনকী আক্তার
*******************
শান্ত নিবিড় ছায়ায় ঘেরা আমাদের ছোট্ট গাঁ
শস্য - শ্যামল আর চির সবুজের মাঠ
জড়িয়ে যায় দৃষ্টি , যত যায় দেখা
এঁকে বেঁকে বয়ে যাওয়া মৃগী নদীর ঘাট ।
পিচঢালা মেঠো পথ , দুই ধারে গাছের সারি
গাঁ থেকে চলে গেছে শহরের মুখ পানে
থাকি যতই দূরে ইচ্ছা করে বার বার ফিরি
আমাদের ছোট্ট গাঁয়ে নাড়ীর টানে।
গাঁয়ের সহজ-সরল মানুষগুলোর জীবন
মানস পটে ভেসে ওঠা সদা হাস্য মুখ,
হৃদয়ের মাঝে গড়ে ওঠে দূর্ভেদ্য এক আত্মিক বন্ধন
রাখলে চরণ নিজ গাঁয়ে খোঁজে পাই পরম সুখ ।
চলে যাই গাঁ ছেড়ে জীবনের তাগিদে জীবিকার খোঁজে
কর্ম ব্যস্ত নগরীতে মিশে যাই,
অবসরে মন শিল্পীর মত রং তুলি দিয়ে আঁকে অন্তরাজ্যে
গাঁয়ে ফেলে আসা দিন যেনো ফিরে পাই ।
ভালো থাকুক গাঁয়ের পথ-ঘাট
শৈশবে ফেলে আসা দিন,
দুরন্তপনায় মেতে থাকা খেলার মাঠ
গাঁয়ের মানুষগুলোর মুখ থাকুক অমলিন ।

বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

একটি গল্প লিখবো
জোনাকী আক্তার
_______________________
অনেকদিন ধরে ভাবতেছি
একটা ছোট একটি গল্প লিখবো ,
কিন্তু আজ কাল করে করে
গল্পটা আর লিখা হয়ে ওঠেনা ।
কি নিয়ে লিখবো ভাবতে ভাবতেই
রাত পেরিয়ে যায় , দিন ফুরিয়ে যায়
গল্পকারদের গল্প হয় ভালোবাসার ,
বিরহের কিংবা সফলতার ।
কিন্তু আমি লিখবো স্বার্থপরতার
ভালোবাসা, বিরহ কিংবা সফলতার
কোনো গল্প আমার জানা নেই ।
স্বারপর মানুষদের দেখে দেখে
নিজের ভেতরে অজান্তে জন্মে ক্ষোভ আর অসহায়ত্ব ,
আমি লিখবো স্বীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য
মানুষগুলোর কর্মকাণ্ডের গল্প ।
স্বল্প সময়ে পরিচয়েই হচ্ছে জনম দোসর
নিজের কার্য হাসিল হলেই
কেউ আর কাউকে চিনেনা, জনমের দোসর তখন হয় পর ।
স্বার্থের জন্যই বাসছে ভালো
কেউবা নির্দোষীকে করছে ঘৃণা ,
কেউবা স্বার্থের মোহে অন্ধ হয়ে
হাসতে হাসতে বসায় ছুরি
নিরহ মানুষের বুকে ।
আমি লিখবো সেই সব স্বার্থপরতার গল্প
অন্যের স্বার্থের কাছে হেরে গিয়ে
নির্যাতিত মানুষের ক্রন্দনের গল্প ,
প্রিয়জন হারানো মানুষের বুকে
জ্বলতে থাকা প্রতিহিংসার গল্প |

বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭



খেয়াঘাট
জোনাকী আক্তার


সময় আর স্রোত প্রবাহমান
একবার চলে যায় তো আর ফিরে আসেনা,
জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোও আর হয়তো আর ফিরেনা 
বার বার ফিরে আসে 
ধুলায় জমাট পড়া কিছু মুহূর্ত 
যা পুরোনো দিনকে ক্ষণিকের জন্য ফিরিয়ে দেয় ।
শানবাঁধানো খেয়াঘাট সেই আগের মতই আছে 
স্রোতের সাথে কিছু কচুরিপানা ভেসে যায় ,
তুমি আমি উত্‍সুক দৃষ্টিতে
ঢেউ খেলানো ভেসে যাওয়া 
দেখতাম যতক্ষণ দেখা যেতো ।
এক অজানা কারনে মন খারাপ করে 
সেদিন বলেছিলাম 
হয়তো বা তোমাকে হারানোর ভয় 
দেখো কচুরিপানা গুলো অনেক দূরে ছিলো ,
তারপর ঘাটের খুব কাছে এসে ভিড়লো
এরপর দেখো আস্তে আস্তে চোখের পলকে
অদৃশ্য হয়ে গেলো ।
কৌতূহলী নয়নে তোমার পানে চেয়ে বলেছিলাম,
তুমিও এভাবে দৃষ্টির বাইরে যাবেনা তো ?
সেদিন তুমি প্রচন্ড হেসেছিলে ,
বলেছিলে তো যে হাত ধরেছো 
সে হাত ছেড়ে দিয়ে দূরে কি করে যাবে ? 
সেদিন হয়তো ঈশ্বরও হেসেছিলো 
আমাদের অজান্তে তোমার কথা শুনে ।
একদিন তুমিও সেই কুচুরিপানা গুলোর মতই চলে গেলো 
আস্তে আস্তে দৃষ্টির সীমানার বাইরে
একা রয়ে গেলাম আমি শানবাঁধানো ঘাটে ।
এখনো সাঁঝের বেলা কাটে 
সেই শানবাঁধানো খেয়াঘাটে ,
কুচুরিপানাগুলোর দূর থেকে কাছে ,
তারপর অনেক দূরে চলে যাওয়ার
এক নির্মম খেলা দেখে ,
এইভাবেই অচেনা মানুষ গুলোও 
আপন হয়ে আবার মিশে যায় অচেনার ভিড়ে ।

রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

অভাগিনী
জোনাকী আক্তার
**************************************

আমি নিজের পায়ে নিজেই মেরেছি কুড়াল
তারই যাতনায় করি দিবা রাত্রি পার,
শুধায় স্বজন দিতে বিসর্জন পিছুটানের ছল,
হাসি মুখে তাই করে রাখি আড়াল
অবাধে ঝরা অভাগিনীর অশ্রুজল।

নিজের দোষেই আজ দু:খের সাগরে ভাসি,
কাকেই বা দিবো আমার এ কষ্টের ভার ?
জলন্ত অগ্নি দেখেও দিয়েছিলাম ঝাঁপ
তারও ভুলে আজ জ্বলে পুড়ে অঙ্গার ।
আমার এ দহন যেনো আমরণ,
নিরন্তন জ্বলছে চিতার সম ।

শুধায় স্বজন দিতে বিসর্জন
ক্ষণিকের অবাঞ্চিত প্রণয়ের মোহ,
অবাধ্য মন মানেনা কারো বারণ
পুরনো অতীতেই বারংবার করে বিচরণ ।
সবার থেকে তাই দূরত্ব বাড়াই
আমি যে এক করেছি ভুল
কাকেই বলবো দিতে আমার এ ভুলের মাশুল ??

চলছি তাই একলা পথে
যে পথে নেই সুখের দিশা ।
জীবনের শেষ প্রান্তের যেদিন পাবো দেখা
সেদিনই কাটবে যে আমার এ ঘোর অমানিশা।

Show more reac
কথা ছিলো
জোনাকী আক্তার
*************************
কথা ছিলো
   দু'জন একসাথে
      ছাদের এক কোণে
        শীতল পাটি পেতে
           বিজন রজনীতে
             জ্যোত্‍স্নার আলো মেখে
               শুভ্র আকাশের
                  তারা গুনবো ।
কথা ছিলো
   শহরের থেকে অদূরে
     তুমি আমি মিলে
        গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে
          শান্ত শীতল ছায়ায়
             দু'জনে হাঁটবো আনমনে
                আর তুমি গান ধরবে ।
কথা ছিলো
   বর্ষায় টিপটিপ বৃষ্টিতে
     সবার চক্ষু এড়িয়ে চুপিচুপি
       খেয়া নৌকা অশান্ত নদীতে
          ভাসিয়ে দিয়ে পাড়ি দিবো
            তোমার আমার চিরচেনা
              ভালোবাসার গোমতী নদী।
কথা ছিলো
   আজও আছে
     স্মৃতির পাতাতে জমে,
       শুধু কথা রাখার জন্য নেই
         আগের মত সেই তুমি ॥

Image result for চোখের ছবি
চোখের ভাষা
জোনাকী আক্তার
*************************************
মাঝে মাঝেই মনে হয়
আমি তোমাকে যুগ যুগ ধরে চিনি ,
তোমার মনোহরণকারী দু'চোখ যেন
আমি শত বর্ষ চেয়ে দেখেছি ।
বুঝার নিমিত্তে, কি এমন যাদুটানা
লুকানো আছে তোমার ওই দু'চোখে ।
যত বারই দেখি, প্রেমে পড়ি ততবারই নতুন করে ,
তোমার অপলক চাহনী যেনো আমায়
তড়িত্‍ বেগে তোমার কাছে টানে ।
আর আমি অক্ষমের মত ছুটে যাই
সেই টানেই তোমার কাছে বার বার ।
কত যে খোঁজি তোমার চোখের ভাষায়
কি এমন কথা সেথায় লুকানো আছে ?
অধম আমি সে ভাষা বুঝার ক্ষমতা
হয়তো বা বিধাতা আমাকে দেয়নি ,
তবুও বোকার মত চেয়ে থাকি ।
শুনেছি চোখের ভাষা কখনো মিথ্যা হতে পারেনা ,
কোথাও মিথ্যা আশ্বাস লুকানো আছে কিনা ,
আমি খুঁজি সেই ভাষা ।
কেনো জানো , আমি তোমাকে হারাতে চাইনা ।
তোমার মিথ্যা ভালোবাসার মায়াতে জড়াতে চাইনা ।
আমি চাই , তুমি পাশে থাকো
সততার বন্ধনে , যে বন্ধন হবে অনন্তকালের জন্য।
Image result for চোখের ছবি
একদিন আমিও জয়ী হবো
জোনাকী আক্তার
**********************************
আমি হেরে যাই বার বার
কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতির কাছে ,
কখনো বা সময়ের নিষ্ঠুরতার কাছে
হারতে হারতে পিঠ ঠেকে যায় দেওয়ালে ।
হেরে গিয়েও পরাজয় মানতে শিখিনি
আমার পরাজয়ে যে ফুটে উঠবে
তোমার ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি ,
অবলীলায় সব দু:খ সইতে রাজি
কিন্তু ভালোবাসার মানুষের তাচ্ছিল্যতাকে নয়।
জীবনের পথে হেরে যাওয়ার জন্য তুমিই দায়ী
তাই বলে ভেবোনা তোমাকে দোষী করবো ,
নিজের মত করে আবারো চলবো
সেই পথেই যে পথে কাঁটা বিছানো ,
কষ্ট হবে , দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়াবে
কখনো হোঁচট খেয়ে বসে পরবো
সেই ব্যথায় আর যণ্ত্রনায় কাতরাবো ।
তবুও থেমে যাবো না কখনোই
কারন দমে যাওয়ার পাত্র আমি নই,
আমি দমে গেলে যে............
তোমার ঠোঁটে ফুটে উঠবে তাচ্ছিল্যের হাসি ,
অবলীলায় সব দু:খ সইতে রাজি
কিন্তু ভালোবাসার মানুষের তাচ্ছিল্যতাকে নয় ।
দেখে নিও সব বৈরীকে জয় করে
কাঁটা বিছানো পথ পাড়ি দিয়ে
আমি পৌঁছে যাবো জীবনের পথের শেষ প্রান্তে ,
সেদিন তোমার সমস্ত অস্তিত্ব মন থেকে মুছে ফেলবো
তুমি হবে সেদিন পরাজিত ,
তোমার চোখে মুখে ভেসে ভেসে উঠবে
অনুসোচনা আর পরিতাপের চিহ্ন ,
তখন জয়ের হাসিটা থাকবে আমার ঠোঁটে ।
Image may contain: one or more people, people standing, ocean, sky, outdoor, nature and water
আমি হতে চাই
জোনাকী আক্তার
************************
আমি গ্রীষ্মের কাঠফাঁটা রোদ্দুরে ছায়া হয়ে
তোমার পাশে সারাটিখন থাকতে চাই,
আমি ক্লান্ত ফিরবে যখন তালপাতার পাখা হয়ে
তোমার পথের ক্লান্তি দূর করতে চাই ।
আমি বরষায় ফোটা প্ৰথম কদমফুল হয়ে
তোমার ভালোবাসাকে সংবর্ধনা জানাতে চাই ,
আমি রাতের বেলায় মেঘে ঢাকা তারা হয়ে
তোমার সাথে লুকোচুরি খেলতে চাই ।
আমি শরতের ঘুড়ি হয়ে
তোমার হৃদয়ের আকাশে উড়তে চাই ,
মৃদু হাওয়ায় দোলা শুভ্র কাশফুল হয়ে
তোমায় একবার ছুঁতে চাই ।
আমি হেমন্তের ভোরে ফোটা শিউলী হয়ে
তোমার হৃদয়াঙ্গন সুরভিত করতে চাই ,
হিমেল হাওয়ায় ভালোবাসার চাদর হয়ে
তোমার সর্বাঙ্গ জড়িয়ে রাখতে চাই ।
আমি কনকনে শীতের সকালে মিষ্টি রোদ হয়ে
তোমার চারপাশে উষ্ণতায় ভরিয়ে দিতে চাই,
কখনো বা ঘন কুয়াশায় শিশির হয়ে
তোমার অঙ্গন খেলার ছলে ভিজিয়ে দিতে চাই ।
আমি বসন্তের কোকিল হয়ে
তোমার মনে ভালোবাসার গান শুনাতে চাই ,
আমি সাত রঙে সজ্জিত প্রজাপতি হয়ে
তোমার মনের বাগানে ডানা মেলে উড়তে চাই ।
আমি তোমায় বারো মাসে ছয়টি ঋতু হয়ে
সারাটি বছর ভালোবাসতে চাই ।

রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৭

#শেষ_বিকেল


একটা চিন্তা মাথায় বার বার ঘুরপাক খাচ্ছে । কেনো জানি মনে হচ্ছে , আমি তোমাকে কখনোই ভুলে যেতে পারবোনা । সময়ের ব্যস্ততার জন্য হয়তো ভুলে থাকতে পারবো , কিন্তু ভুল করেও ভুলে যেতে পারবোনা । যেদিন তোমাকে শেষ বারের মত বিদায় দিলাম। সেদিন খুব সহজেই বলেছিলাম , আমি পারবো তোমাকে ভুলে যেতে । কারন স্বার্থপর মানুষগুলো কখনো পিছুটান থাকতে নেই । আমিও সেদিন পিছুটান গুলো অবজ্ঞা করেছিলাম । কিন্তু তুমি বলেছিলে, পারবেনা কখনোই আমাকে ভুলে যেতে। আমি তোমার মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষে মিশে গেছি। আমাকে ভুলে যাওয়া অতটা সহজ নয়। সব থেকে বড় কথা , তুমি আমাকে ভালোবাসো । মানুষ সবকিছু ভুলতে পারলেও , তার ভালোবাসাকে ভুলতে পারেনা । কখনোই পারা সম্ভব না। মনে করে দিবে বার বার একাকী বিকেল , মধ্যরাত , ঝুম বৃষ্টি । নীরবে শুনেছিলাম , কোনো মতে চোখের জল লুকিয়ে মিকি হাসি দিয়েছিলাম। তুমি বুঝেছিলে আমার অভিনয়টুকু । কিন্তু তোমার দায়িত্বের কাছে আর তোমার পরিবারের কাছে তুমি ছিলে আবদ্ধ । তোমার হয়তো অনেক কথায় বলার ছিলো । কিন্তু আবেগের কাছে হেরে যাওয়ার ভয়ে পালিয়ে গেলে। হয়তো একা থাকলে তোমার চোখ থেকেও বৃষ্টি নামবে। সবার আড়ালে ঝরবে। ছেলেদের যে কারো সামনে কাঁদতে নেই। নিথর মূর্তির মত চলে যেতে দেখছিলাম , ইচ্ছা করেছিলো শেষবারের মত বলতে love u more than thousands . নাহ , ইচ্ছাগুলোকে দমন করেছিলাম । ভালোবাসি বলার অধিকার তখন থেকেই ছেড়ে দিয়েছি। যখন তোমাকে অন্য পথের পথিক হতে বলেছিলাম। এছাড়া আর কোনো পথই ছিলোনা। তুমি আমি এমন এক নীতির কাছে আবদ্ধ ছিলাম , সেখানে কোনো ভালোবাসার অস্তিত্ব নেই ।আজ জানতে ইচ্ছা করছে , তুমি কি ভালো আছে ? হয়তো তুমি ভালো আছো , ভালোই থেকো ।আর আমি ... , আমার কথা বাদই দিলাম। স্বার্থপরা সব সময় ভালো থাকে । আমিও অনেক ভালো আছি ।

বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৭



কে তুমি ? 
জোনাকী আক্তার
****************************
তুমি কি জানো অনিমেষ 
কে তুমি ??
হয়তবা তোমার জানা নেই 
আমার কাছে, কি তোমার পরিচয় ?
তবে এখন জেনে রেখো ,
যেদিন তোমার প্রথম দেখা পেলাম
সেদিন তুমি থেকে তোমার বাস
আমার অন্তরদৃষ্টি তে।
তুমি হয়ে গেলে আমার চোখের তারা ,
তোমাকে নিয়ে কত রঙিন স্বপ্ন বুনা চোখের 
তুমি হলে আমার কল্পরাজ্যের রাজা ।
তুমি কি জানো অনিমেষ 
কে তুমি ??
হয়তবা তোমার জানা নেই 
আমার কাছে ,কি তোমার পরিচয় ?
তবে এখন জেনে রেখো ,
যেদিন তোমার পাশে প্রথম বসা 
সেদিন থেকে তোমাকে আমার চারপাশে
প্রতিটি স্পন্দনে তোমার অনুভব করা ।
আর তুমি হয়ে গেলে আমার হৃদয়ের স্পন্দন।
তুমি কি জানো অনিমেষ
কে তুমি ?
হয়তবা তোমার জানা নেই 
আমার কাছে, কি তোমার পরিচয় ?
তবে এখন জেনে রেখো, 
যেদিন তোমার হাতটি প্ৰখম ধরা 
সেদিন থেকে তোমার পথসঙ্গী ভাবা ,
তোমাকে বিশ্বাস করে বাকিটা জীবন কাটিয়ে দেওয়া ।
তুমি হলে আমার বিশ্বস্ত জীবনসঙ্গী ।
কখনোই বলা হয়নি তোমায়
আমার কাছে, কি তোমার পরিচয় ?
প্রকৃত ভালোবাসা নাকি অপ্রকাশিত থাকে
হয়তো আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে ।
তোমাকে কত কথা ছিলো বলার ,
বলা হয়ে উঠেনি , সময়ের অভাবে হয়তো বা কখনো হবেও না বলা ।

শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৭



চিনতে তুমি পারোনি
জোনাকী আক্তার

তুমি দেখেছো আমায় অসংখ্যবার
কিন্তু বুঝতে তুমি পারোনি একটিবার ,
কত হাসির আড়ালে কষ্ট চেপে রেখেছিলাম 
তুমি তা তিল পরিমাণও টের পাওনি ।
তোমার কত আঘাত নীরবে সয়েছি
মুখ ফোটে বলা হয়নি তোমাকে হারাবার ভয়ে ।
তোমায় নিয়ে কত ইচ্ছা ছিলো মনে
শুধু বলা হয়নি চাপা অভিমানের কারনে,
প্রথমত তোমাকে যতটা কাছের মত হতো,
সময়ের বদৌলতে তোমার দূরত্ব ততই বেড়েই চলত।
আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম তোমাকে আঁকড়ে ধরে রাখার,
কত আকুতি ছিলো হৃদয়ের সুপ্ত ইচ্ছা গুলো পূরণ করার।
ইচ্ছা ছিলো তোমাকে সুখের পতাকা করে 
হৃদয়ে উড়াবো অনন্তকালের জন্য ,
তোমার ঠোঁটের কোণে ফোটে উঠা মৃদু হাসিকে
শান্তির কপোত মনে করে সারাবেলা কাটাবো ।
চোখে চোখ রেখে একই স্বপ্ন দেখবো ,
তোমার হাতটি ধরে স্বপ্ন গুলো সাজাবো ।
আসলে কিছুই করা হলো না, না ইচ্ছা পূরণ
না তোমার সাথে সারা জনম কাটানো ।
সব শেষে যে যার মত করে 
দুজনে দুই দিকে ছুটে চলছি ,
অজানা অচেনা এক দূর্গম পথ ধরে 
এটাই হয়তো চেয়েছিলে তুমি ,
তাই বিনা শর্তে দিয়েছিলাম মুক্তি সমস্ত মায়ার বাঁধন থেকে।

সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০১৭

খুঁজে নেবো তোমাকে
জোনাকী আক্তার
***************************************
আমার ভালোবাসা মিছে হতে পারেনা
তোমার অচেনা ধুম্রমায়া জালে ,
যদি তুমি হারিয়ে যেতে চাও
যেথায় খুশি চলে যাও ।
যদি থাকে শ্বাস খুঁজে নেবো
তোমাকেই বারবার প্রকৃতির লীলাভূমিতে ।
তোমার হারিয়ে যাবার পথে দিবোনা বাধা
সুনীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলাতে
ভেসে ভেসে সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে
যদি থাকে শ্বাস খুঁজে নেবো
তোমাকে অপরূপ বসুধাতে ।
হারাবে কোথায় তুমি ...?
তোমার চারপাশ জুড়ে,
আমার ভালোবাসার দৃষ্টির আনাগোনা
যত দূরেই যাও হারাতে তুমি পারবেনা ।
প্রবল বেগে ঝড়ো হাওয়ায় ভেসে ,
যদি থাকে শ্বাস খুঁজে নেবো
আঁধারে নিমজ্জিত অপূর্ব রজনীতে ।

Image may contain: one or more people, people standing and outdoor

শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০১৭

ফুলওয়ালী 
জোনাকী আক্তার
****************************************

ব্যস্ত নগরীর জ্যামময় পথ পাড়ি দিয়ে
ফিরছিলাম সেদিন নিজ আলয়ে ,
বড্ড অতিষ্ট হয়ে ইচ্ছা হলো পায়ে হেঁটে ফিরতে.......
যেই ভাবা সেই কাজ বাড়িয়ে দিলাম পা নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে ।
কিছুদুর গিয়ে থমকে যেতে হলো মায়াবী এক সুরে
নিন না একটা ফুল যেটা খুশি ,
স্বল্প দামে এমন ফুল নাও পেতে পারেন ।
অবাক হচ্ছিলাম তার করুণ চাহনীতে
থমকে গিয়েছিলাম তার অসহায় স্বরে ।
যে বয়সে তে মায়ের আঁচল নিয়ে করতাম খেলা !!
সেই বয়সে সে ভাসিয়েছে জীবিকার ভেলা ।
ফিরে পেলাম সম্বিত সেই করুণ সুরে
ভালোবাসেন যারে , দিয়েন তারে
শুধু নিয়ে যান একটি ফুল ,
উত্‍সুক দৃষ্টিতে ছুঁড়ে দিলাম ছোট্ট প্রশ্নের বাণে
ভালোবাসা কি বুঝো তুমি ?
সহাস্যে নির্ভয়ে বলে দিয়ে দিলো সে
বুঝবো না ক্যান , খুব বুঝি
সারাবেলা পার করে যখন ফিরি মায়ের কাছে
যা হয় আয় , তাই তুলে দেই তার হাতে ।
খুশিতে মা চুমু খেয়ে ললাটে নেয় বুকে জড়িয়ে ,
খাবারের সিংহভাগ দেয় তুলে পাতে ।
অসুখে মা পড়ে আছে , পারেনি যেতে কাজে
যা পাবো আজ তাই দিয়ে খাবার কিনবো সাঝে ।
অবাক হচ্ছিলাম মাতৃভক্তিতে ,
বাকহীন হয়ে শুনেছিলাম ভালোবাসার সংজ্ঞা ।
বুঝিনা শুধু আমরা , ভালোবাসার মানে
হচ্ছি আমরা অমানুষ যাণ্ত্রিকতার টানে ,
মা বাবা অসুখ হলে আপদ বলি তারে
বৃদ্ধ হলে হোন বুঝা , চোখের বালি বলে যারে ।
কিইবা হবে এতো ডিগ্রী দিয়ে
যদি না পারে বৃদ্ধ মা বাবার সম্বল হতে ,
জন্মই যে তার বৃথা , বুঝবে সেদিন
যেদিন সেও পাবে সম ব্যথা ।

মরীচিকা
জোনাকী আক্তার
*******************
আমি ছিলাম ঘোরে , দৃষ্টিতে ভ্রম 
ভ্রম টাই যে হবে ভুল,
জানা ছিলো না'কো
তাই তো ভাসে জলে আমার অক্ষিকুল ।
তৃষ্ণা মেটতো এক পলক দেখে
ছুটে যেতাম সব কর্ম রেখে,
যখনই তোমায় পড়তো মনে
কখনো হতো দেখা , কখনো হতো না তোমার সনে ।
যেদিন তোমায় পাইনি দেখতে
শুভ্র আকাশ ছেয়ে যেতো কালো মেঘে ,
আমার বিষন্ন মনে এঁকেছি তোমায় বারংবার
অবুঝের মত কেঁদেছি কত দৃষ্টি এড়িয়ে সবার ।
যখন মরিয়া হলাম তোমায় ছুঁতে
ক্ষণিকের তরে তোমার পাশে বসতে,
তুমি হলে বিলীন , চলে গেলে দৃষ্টির অগোচরে
মনের ঘোর , দৃষ্টির ভ্রম পারিনি নিতে শুধরে ।
ছন্নছাড়া মন পারেনি বুঝতে
কত যে সময় করেছি অপচয় তোমায় খোঁজতে ,
তুমি যে ছিলে অবয়ব মরীচিকা ,
হয়ত বা ছিলে কোনো দূর আকাশের নিহারিকা ।
তোমাকে পাবার নেই যে সাধ্য ,
কি করে করবো আমি অক্ষমতা কে অমান্য ?

শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭

ভালোবাসার অপমৃত্যু
জোনাকী আক্তার
*****************************************
কেটে গেলো তোমায় ছাড়া বছরের পর বছর
এলো না ত তুমি , নিলে না খবর ,
তোমাকে ছাড়া যেনো কাটতো না দিন ,
দু'কূল ভেসে যেতো -
হাসি মাখা মুখ খানাও হয়ে যেতো মলিন ।
যদি তুমি দেখাতে হারিয়ে যাবার ভয় ,
কিংবা চলে যেতে দূরে কোথাও,
যখন খোঁজে না পেতাম দু'চোখের সীমানায় ।

সেইদিনগুলো শুধুই জমে আছে স্মৃতি পাতায়
যে যার মতো করে আছি সবাই ,
কেউ রাখে না কারো খোঁজ
মায়া আর পিছুটান কাটানোর ভনিতায় ,
নিজেকে নিয়ে বড্ড ব্যস্ত তুমি-আমি , আমর সবাই ।

কিন্তু ভালোবাসা ??
সে কি আদৌ বেঁচে আছে ?
না'হ সেও হারিয়ে গেছে নীল দিগন্তে
মিশে গেছে এক অজানা সীমান্তে ।
ভুল করেও যদি কোন দিন খোঁজ তারে,
পাবেনা আর কখনোই তাকে ফিরে ।

যেই হৃদয়ে তুমি দিয়েছিলে ভালোবাসা,
সেই হৃদয়ে ঢেলে ছিলে মরণের নেশা ।
মরণের নেশায় মত্ত হয়ে হয়েছে নি:শেষ
কোথাও নেই আর তোমার ভালোবাসা,
তুমি নিজ হাতে তাকে করেছো শেষ ।

মঙ্গলবার, ১১ জুলাই, ২০১৭



শুরু থেকে শেষ
জোনাকী আক্তার
*************************
তুমি জানোনা ,জানোনা অনিমেষ
তুমি যে আমার সন্ধ্যাপ্রদীপ,
আধারে জ্বলতে থাকা দীপ শিখা 
তোমার জন্যই কেটে যায়
হৃদয়ের গহীনে জমাট বাধা আধার ।
তুমি জানোনা , জানোনা অনিমেষ
তুমি আমার পথের পাথেয়,
জীবনের পথ চলতে চলতে, ক্লান্ত হলে 
খুঁজি আমি তোমার মাঝেই 
ভালোবাসা আর নিরাপদ আশ্রয়।
তুমি জানোনা, জানোনা অনিমেষ
আমার সুখ গুলো যে তোমাকে ঘিরে,
দু:খ ঘিরে রাখে শুধু তোমার কারনেই,
তোমার হাসিমুখ, এনে দেয় স্বর্গের সুখ
যদি বুঝো ভুল , কর অভিমান 
নেমে আসে দু:খ পর্বত সমান ।
তুমি করো আঘাত , দিও কষ্ট
তবুও যেওনা, যেওনা দূরে অনিমেষ
তুমিই শুরু , তোমাতে হতে চাই শেষ ।

কেন এমন হয় জোনাকী আক্তার ************************** ভাঙা গড়ার খেলায় নিজেকে বারবার গড়ি, দু:খ-সুখের ভেলায় ঘুম ভাঙার মতই কেটে যায় সুখের রেশ...