শুক্রবার, ২৬ মে, ২০১৭

রূপন্তি
জোনাকী আক্তার
এইতো প্রায় সেদিনের কথা
ঘোর অমাবস্যা ভেদ করে ,
পূর্ণিমার চাঁদ দেখা দিয়েছিলো ।
সেই সাথে বাবা-মার ঘর আলোকিত করে
ফুলের মত ফুটফুটে এক কন্যার আবির্ভাব হয় ।
যেই দেখে সেই বলে
বেশ হয়েছে , বেঁচে থাকুক
অনন্তকাল ।
চক্ষুযুগল হরিণের ন্যায় মায়াবিনী
গোলাপের পাপড়ির মত ঠোঁট ।
বাবাও আদর করে নাম রাখে রূপন্তি ,
রূপু বলেই ডাকতো সবাই
মুগ্ধ হতো আদু আদু কথা বলায় ,
ছোট ছোট পায়ে গুটি গুটি পদচারণ
যেন সবার হৃদয় কেড়ে নিতো ।
ইচ্ছা ছিলো বাবার মেয়ে বানাবে ব্যারিস্টার
দেখতে দেখতে রূপু বাবা-মার কোল ছাড়লো
স্কুলের গন্ডি পেরুলো ,
সেবার জেলার মাঝে রূপুই হলো সেরা,
খুশি বাবা-মার চোখ জ্বল জ্বল করে উঠলো,
পাড়া-পড়শি সবাই বলে
মেয়ে তো নয় যেনো রূপুর কাঠি,
বাবা-মাকে বলতো তখন
মেয়ে যে তাদের মানুষ হবে,
যশ ছড়াবে সবার ।
বাবার ইচ্ছা করতে পূরণ
গেলো উচ্চ শিক্ষা নিতে,
কে জানতো হায় !
এখানেই তার কপাল পুড়বে ,
বাবার দেখা স্বপ্ন ভাঙ্গবে ?
সেখানেরই এক প্ৰভাবশালী নরপশুর ,
সরলমনা রূপু পড়লো কুনজরে।
প্রণয়ের ফাঁদে দিয়েছিলো পা,
দেখেছিলো আরও একটি স্বপ্ন ।
সেই স্বপ্নই যে তার জীবনে হবে অভিশাপ,
কে জানতো তা ?
বিশ্বাস করে রূপু গিয়েছিলো নরাধমের সাথে,
জানতোনা রূপু তার বিশ্বাস ছিলো মূল্যহীন
সেই নরপশুর কাছে ।
রাগে,দু:খে ,ক্ষোভে আর হতাশায় সেদিনই রাতের অন্ধকারে
রূপু পথ বেছে নেয় আত্মহননের ।
পাড়া-পড়শিদের মাঝে যারাও ছিলো রুপুর সাফল্যে পঞ্চমুখরিত
তারাও এখন নির্দ্বিধায় কটুবাক্যে দেয় ধিক্কার ,
প্রাণ হারালো রুপন্তি , মান হারালো বাবা ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কেন এমন হয় জোনাকী আক্তার ************************** ভাঙা গড়ার খেলায় নিজেকে বারবার গড়ি, দু:খ-সুখের ভেলায় ঘুম ভাঙার মতই কেটে যায় সুখের রেশ...