মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০১৭

যৌতুক
জোনাকী আক্তার
******************************
অজপাড়া গাঁয়ে থাকত এক দস্যি মেয়ে
মুক্ত আকাশে উড়ন্ত বিহঙ্গের মত ,
সারাবেলা কাটত যে তার পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে,
কিশোরীর চাঞ্চল্যতা ছিলো সারা অঙ্গন জূড়ে ।
বাবার ছিলো চোখের মণি , দাদীর সঁই
হাসতো -খেলতো তাদের সাথে ভাব ছিলো খুবই ।
মা যে তার ছিলো না ঘরে
ছোট্টকালেই একা রেখে ,
চলে গেছেন পরপারে ।
মায়ের অভাব বুঝতো না সে
বাবাই যে ছিলো মা ।
কষ্ট হবে ভেবে আদরের দুলালীর
বাবাও তার নতুন করে বাঁধেনি ঘর।
বাবা যে তার শখ করে
বিয়ে দিলো এক বনেদীর ঘরে,
ধন-দৌলত ছিলো যে তাদের
ছিলো না'কো মনুষত্ব ।
বিয়েতে তারা চেয়েছিলো মোটা অংকের পণ ,
মেয়ের সুখের কথা ভেবে
কত যে কষ্ট করে জুটিয়েছিলো বাপধন ।
মেয়েটি আর সুখী হয়নি,
সুখ যে ছিলো না তার অদৃষ্টে ।
যতদিন ছিলো পণের মূল্য ,
ততদিনই পেল শশুড়ালয়ে যতন ,
তারপরই শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন ।
কথায় কথায় বলতো তাকে
বাবার থেকে পণ আনতে ।
মেয়েটি কভু চায়নি দেখতে,
চোখের সামনে বাবার স্বর্বস্ব হারাতে ।
নীরবে সব সয়ে নিতো জল ফেলতো আড়ালে,
নির্যাতনের হার বাড়িয়ে দিলো ,
তবুও যখন সয়ে চুপটি করে থাকলো
পাষণ্ড স্বামী মেতে উঠলো
নির্মম হত্যাযজ্ঞে ,
অবশেষে আর সইতে না পেরে চলে যায় পরপারে।
বিচারের জন্য পাগলের মত বাবা ঘুরেছিলো দ্বারে দ্বারে ,
হয়নি বিচার ছিলো না যে প্রমাণ,
তাই বাবাও ছেড়ে চলে গেলো বুকে পৃথিবী নিয়ে অভিমান ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

কেন এমন হয় জোনাকী আক্তার ************************** ভাঙা গড়ার খেলায় নিজেকে বারবার গড়ি, দু:খ-সুখের ভেলায় ঘুম ভাঙার মতই কেটে যায় সুখের রেশ...