বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

একটি গল্প লিখবো
জোনাকী আক্তার
_______________________
অনেকদিন ধরে ভাবতেছি
একটা ছোট একটি গল্প লিখবো ,
কিন্তু আজ কাল করে করে
গল্পটা আর লিখা হয়ে ওঠেনা ।
কি নিয়ে লিখবো ভাবতে ভাবতেই
রাত পেরিয়ে যায় , দিন ফুরিয়ে যায়
গল্পকারদের গল্প হয় ভালোবাসার ,
বিরহের কিংবা সফলতার ।
কিন্তু আমি লিখবো স্বার্থপরতার
ভালোবাসা, বিরহ কিংবা সফলতার
কোনো গল্প আমার জানা নেই ।
স্বারপর মানুষদের দেখে দেখে
নিজের ভেতরে অজান্তে জন্মে ক্ষোভ আর অসহায়ত্ব ,
আমি লিখবো স্বীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য
মানুষগুলোর কর্মকাণ্ডের গল্প ।
স্বল্প সময়ে পরিচয়েই হচ্ছে জনম দোসর
নিজের কার্য হাসিল হলেই
কেউ আর কাউকে চিনেনা, জনমের দোসর তখন হয় পর ।
স্বার্থের জন্যই বাসছে ভালো
কেউবা নির্দোষীকে করছে ঘৃণা ,
কেউবা স্বার্থের মোহে অন্ধ হয়ে
হাসতে হাসতে বসায় ছুরি
নিরহ মানুষের বুকে ।
আমি লিখবো সেই সব স্বার্থপরতার গল্প
অন্যের স্বার্থের কাছে হেরে গিয়ে
নির্যাতিত মানুষের ক্রন্দনের গল্প ,
প্রিয়জন হারানো মানুষের বুকে
জ্বলতে থাকা প্রতিহিংসার গল্প |

বুধবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭



খেয়াঘাট
জোনাকী আক্তার


সময় আর স্রোত প্রবাহমান
একবার চলে যায় তো আর ফিরে আসেনা,
জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোও আর হয়তো আর ফিরেনা 
বার বার ফিরে আসে 
ধুলায় জমাট পড়া কিছু মুহূর্ত 
যা পুরোনো দিনকে ক্ষণিকের জন্য ফিরিয়ে দেয় ।
শানবাঁধানো খেয়াঘাট সেই আগের মতই আছে 
স্রোতের সাথে কিছু কচুরিপানা ভেসে যায় ,
তুমি আমি উত্‍সুক দৃষ্টিতে
ঢেউ খেলানো ভেসে যাওয়া 
দেখতাম যতক্ষণ দেখা যেতো ।
এক অজানা কারনে মন খারাপ করে 
সেদিন বলেছিলাম 
হয়তো বা তোমাকে হারানোর ভয় 
দেখো কচুরিপানা গুলো অনেক দূরে ছিলো ,
তারপর ঘাটের খুব কাছে এসে ভিড়লো
এরপর দেখো আস্তে আস্তে চোখের পলকে
অদৃশ্য হয়ে গেলো ।
কৌতূহলী নয়নে তোমার পানে চেয়ে বলেছিলাম,
তুমিও এভাবে দৃষ্টির বাইরে যাবেনা তো ?
সেদিন তুমি প্রচন্ড হেসেছিলে ,
বলেছিলে তো যে হাত ধরেছো 
সে হাত ছেড়ে দিয়ে দূরে কি করে যাবে ? 
সেদিন হয়তো ঈশ্বরও হেসেছিলো 
আমাদের অজান্তে তোমার কথা শুনে ।
একদিন তুমিও সেই কুচুরিপানা গুলোর মতই চলে গেলো 
আস্তে আস্তে দৃষ্টির সীমানার বাইরে
একা রয়ে গেলাম আমি শানবাঁধানো ঘাটে ।
এখনো সাঁঝের বেলা কাটে 
সেই শানবাঁধানো খেয়াঘাটে ,
কুচুরিপানাগুলোর দূর থেকে কাছে ,
তারপর অনেক দূরে চলে যাওয়ার
এক নির্মম খেলা দেখে ,
এইভাবেই অচেনা মানুষ গুলোও 
আপন হয়ে আবার মিশে যায় অচেনার ভিড়ে ।

রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

অভাগিনী
জোনাকী আক্তার
**************************************

আমি নিজের পায়ে নিজেই মেরেছি কুড়াল
তারই যাতনায় করি দিবা রাত্রি পার,
শুধায় স্বজন দিতে বিসর্জন পিছুটানের ছল,
হাসি মুখে তাই করে রাখি আড়াল
অবাধে ঝরা অভাগিনীর অশ্রুজল।

নিজের দোষেই আজ দু:খের সাগরে ভাসি,
কাকেই বা দিবো আমার এ কষ্টের ভার ?
জলন্ত অগ্নি দেখেও দিয়েছিলাম ঝাঁপ
তারও ভুলে আজ জ্বলে পুড়ে অঙ্গার ।
আমার এ দহন যেনো আমরণ,
নিরন্তন জ্বলছে চিতার সম ।

শুধায় স্বজন দিতে বিসর্জন
ক্ষণিকের অবাঞ্চিত প্রণয়ের মোহ,
অবাধ্য মন মানেনা কারো বারণ
পুরনো অতীতেই বারংবার করে বিচরণ ।
সবার থেকে তাই দূরত্ব বাড়াই
আমি যে এক করেছি ভুল
কাকেই বলবো দিতে আমার এ ভুলের মাশুল ??

চলছি তাই একলা পথে
যে পথে নেই সুখের দিশা ।
জীবনের শেষ প্রান্তের যেদিন পাবো দেখা
সেদিনই কাটবে যে আমার এ ঘোর অমানিশা।

Show more reac
কথা ছিলো
জোনাকী আক্তার
*************************
কথা ছিলো
   দু'জন একসাথে
      ছাদের এক কোণে
        শীতল পাটি পেতে
           বিজন রজনীতে
             জ্যোত্‍স্নার আলো মেখে
               শুভ্র আকাশের
                  তারা গুনবো ।
কথা ছিলো
   শহরের থেকে অদূরে
     তুমি আমি মিলে
        গাঁয়ের মেঠো পথ ধরে
          শান্ত শীতল ছায়ায়
             দু'জনে হাঁটবো আনমনে
                আর তুমি গান ধরবে ।
কথা ছিলো
   বর্ষায় টিপটিপ বৃষ্টিতে
     সবার চক্ষু এড়িয়ে চুপিচুপি
       খেয়া নৌকা অশান্ত নদীতে
          ভাসিয়ে দিয়ে পাড়ি দিবো
            তোমার আমার চিরচেনা
              ভালোবাসার গোমতী নদী।
কথা ছিলো
   আজও আছে
     স্মৃতির পাতাতে জমে,
       শুধু কথা রাখার জন্য নেই
         আগের মত সেই তুমি ॥

Image result for চোখের ছবি
চোখের ভাষা
জোনাকী আক্তার
*************************************
মাঝে মাঝেই মনে হয়
আমি তোমাকে যুগ যুগ ধরে চিনি ,
তোমার মনোহরণকারী দু'চোখ যেন
আমি শত বর্ষ চেয়ে দেখেছি ।
বুঝার নিমিত্তে, কি এমন যাদুটানা
লুকানো আছে তোমার ওই দু'চোখে ।
যত বারই দেখি, প্রেমে পড়ি ততবারই নতুন করে ,
তোমার অপলক চাহনী যেনো আমায়
তড়িত্‍ বেগে তোমার কাছে টানে ।
আর আমি অক্ষমের মত ছুটে যাই
সেই টানেই তোমার কাছে বার বার ।
কত যে খোঁজি তোমার চোখের ভাষায়
কি এমন কথা সেথায় লুকানো আছে ?
অধম আমি সে ভাষা বুঝার ক্ষমতা
হয়তো বা বিধাতা আমাকে দেয়নি ,
তবুও বোকার মত চেয়ে থাকি ।
শুনেছি চোখের ভাষা কখনো মিথ্যা হতে পারেনা ,
কোথাও মিথ্যা আশ্বাস লুকানো আছে কিনা ,
আমি খুঁজি সেই ভাষা ।
কেনো জানো , আমি তোমাকে হারাতে চাইনা ।
তোমার মিথ্যা ভালোবাসার মায়াতে জড়াতে চাইনা ।
আমি চাই , তুমি পাশে থাকো
সততার বন্ধনে , যে বন্ধন হবে অনন্তকালের জন্য।
Image result for চোখের ছবি
একদিন আমিও জয়ী হবো
জোনাকী আক্তার
**********************************
আমি হেরে যাই বার বার
কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতির কাছে ,
কখনো বা সময়ের নিষ্ঠুরতার কাছে
হারতে হারতে পিঠ ঠেকে যায় দেওয়ালে ।
হেরে গিয়েও পরাজয় মানতে শিখিনি
আমার পরাজয়ে যে ফুটে উঠবে
তোমার ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি ,
অবলীলায় সব দু:খ সইতে রাজি
কিন্তু ভালোবাসার মানুষের তাচ্ছিল্যতাকে নয়।
জীবনের পথে হেরে যাওয়ার জন্য তুমিই দায়ী
তাই বলে ভেবোনা তোমাকে দোষী করবো ,
নিজের মত করে আবারো চলবো
সেই পথেই যে পথে কাঁটা বিছানো ,
কষ্ট হবে , দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়াবে
কখনো হোঁচট খেয়ে বসে পরবো
সেই ব্যথায় আর যণ্ত্রনায় কাতরাবো ।
তবুও থেমে যাবো না কখনোই
কারন দমে যাওয়ার পাত্র আমি নই,
আমি দমে গেলে যে............
তোমার ঠোঁটে ফুটে উঠবে তাচ্ছিল্যের হাসি ,
অবলীলায় সব দু:খ সইতে রাজি
কিন্তু ভালোবাসার মানুষের তাচ্ছিল্যতাকে নয় ।
দেখে নিও সব বৈরীকে জয় করে
কাঁটা বিছানো পথ পাড়ি দিয়ে
আমি পৌঁছে যাবো জীবনের পথের শেষ প্রান্তে ,
সেদিন তোমার সমস্ত অস্তিত্ব মন থেকে মুছে ফেলবো
তুমি হবে সেদিন পরাজিত ,
তোমার চোখে মুখে ভেসে ভেসে উঠবে
অনুসোচনা আর পরিতাপের চিহ্ন ,
তখন জয়ের হাসিটা থাকবে আমার ঠোঁটে ।
Image may contain: one or more people, people standing, ocean, sky, outdoor, nature and water
আমি হতে চাই
জোনাকী আক্তার
************************
আমি গ্রীষ্মের কাঠফাঁটা রোদ্দুরে ছায়া হয়ে
তোমার পাশে সারাটিখন থাকতে চাই,
আমি ক্লান্ত ফিরবে যখন তালপাতার পাখা হয়ে
তোমার পথের ক্লান্তি দূর করতে চাই ।
আমি বরষায় ফোটা প্ৰথম কদমফুল হয়ে
তোমার ভালোবাসাকে সংবর্ধনা জানাতে চাই ,
আমি রাতের বেলায় মেঘে ঢাকা তারা হয়ে
তোমার সাথে লুকোচুরি খেলতে চাই ।
আমি শরতের ঘুড়ি হয়ে
তোমার হৃদয়ের আকাশে উড়তে চাই ,
মৃদু হাওয়ায় দোলা শুভ্র কাশফুল হয়ে
তোমায় একবার ছুঁতে চাই ।
আমি হেমন্তের ভোরে ফোটা শিউলী হয়ে
তোমার হৃদয়াঙ্গন সুরভিত করতে চাই ,
হিমেল হাওয়ায় ভালোবাসার চাদর হয়ে
তোমার সর্বাঙ্গ জড়িয়ে রাখতে চাই ।
আমি কনকনে শীতের সকালে মিষ্টি রোদ হয়ে
তোমার চারপাশে উষ্ণতায় ভরিয়ে দিতে চাই,
কখনো বা ঘন কুয়াশায় শিশির হয়ে
তোমার অঙ্গন খেলার ছলে ভিজিয়ে দিতে চাই ।
আমি বসন্তের কোকিল হয়ে
তোমার মনে ভালোবাসার গান শুনাতে চাই ,
আমি সাত রঙে সজ্জিত প্রজাপতি হয়ে
তোমার মনের বাগানে ডানা মেলে উড়তে চাই ।
আমি তোমায় বারো মাসে ছয়টি ঋতু হয়ে
সারাটি বছর ভালোবাসতে চাই ।

কেন এমন হয় জোনাকী আক্তার ************************** ভাঙা গড়ার খেলায় নিজেকে বারবার গড়ি, দু:খ-সুখের ভেলায় ঘুম ভাঙার মতই কেটে যায় সুখের রেশ...