বুধবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৮

দুপুরে ক্যাম্পাস থেকে বাসাতে ফিরলাম।দুইটা ক্লাস ছিলো তাই তাড়াতাড়ি বাসাতে চলে আসছি। এরই মাঝে আম্মু রুমে আসলো।
আম্মু- নিতু রেস্ট নিয়ে , খেয়ে রেডি হয়ে থাকিস। বিকেলে তোকে দেখতে আসবে।
আমি-(দেখতে আসার কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লাম।হঠাত্‍ করে কি এমন হলো যে, আমাকে দেখতে আসবে? ) বলা নেই , কওয়া নেই দেখতে আসবে মানে? আমি যেতে পারবো না।
আম্মু- তা যেতে পারবি কেন? ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ক্যাফেতে অন্য ছেলের সাথে ঠিকই দেখা করতে পারবি।কোনো কথা শুনতে চাইনা। বিকেলে যেন তোকে রেডি থাকতে দেখি।
আমি- (খাইছেরে, আম্মু অভির কথা জেনে গেলো নাতো আবার? দুর ছাই।অভির কথা আম্মুকে কে বলবে? আবার বললেও বলতে পারে।পাশের বাসাতে হ্রামী ফাহিম(আমার ক্লাসমেট) থাকে।কিছুদিন আগে অভির সাথে ক্যাফে তে ছিলাম।ক্লাসে নাম ডেকেই স্যার চলে গেছে।তা তো আম্মুর জানার কথা না। যাই হোক আম্মুর কাছে জানতেই হবে ক্যাফেতে কার সাথে দেখা করেছি? ) আমি আবার কার সাথে দেখা করছি ?তাও আবার ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ?
আম্মু-সেদিন ফাহিম বললো, তুই নাকি কোন ছেলের সাথে ক্যাফে তে বসে আড্ডা দিচ্ছিস?
আমি-ওও আগে বলবেনা?সব গুজব আম্মু। এসবে কান দিও নাহ।
মনে হয় কোনো ক্লাস হয়নি , তখন কোনো বন্ধুর সাথে চা খেতে গিয়েছিলাম। আর হ্রামী ফাহিম এসে তোমার কান পঁচিয়ে গেছে।
আম্মু- তা তো আমি জানিনা।ওর কথা শুনে তোর বাবা ছেলে ঠিক করেছে। আজকে দেখতে আসবে, আর সাতদিনের ভেতর কথা পাকা করা হবে।যে যাই বলুক, তোকে তো একদিন পরের ঘরে যেতেই হবে।
আম্মু চলে গেলো। অভিকে ফোন দিলাম।
আমি-অভি শুনছো? আজকে আমাকে দেখতে আসবে।প্লিজ কিছু করো।আব্বু নাকি ওই খানেই বিয়ে দিবে আমার।
অভি-ধুর, এসব গুজবে কান দিও না তো। আমি দেখতেছি কি করা যায়? তুমি লক্ষি মেয়ের মত ওদের সামনে যাও।চিন্তা করো না।আমি আছি তো তোমার পাশে।একদিন আগে হোক আর পরে হোক, বিয়ে তোমার আমার সাথেই হবে ইনশাল্লাহ।তুমি রেডি হতে থাকো।আমি কালকে ছেলের বাবার সাথে কথা বলবো। ঠিকানা দিও আমাকে।
আমি- ঠিক আছে।যা করার ভেবে চিন্তে করো।
অভির সাথে কথা বলে , খেয়ে রেডি হয়ে রুমেই বসে রইলাম।অভি কি করবে বুঝতেছিনা।বিকেলে ছেলে, ছেলের বাবা আর কে কে যেন দেখতে আসছিলো।দেখে চলে গেলো।আব্বু বলতেছে আগামী সপ্তাহেই বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হবে।আমি আব্বুর ফোন থেকে ছেলের বাবার ফোন নাম্বার, আর আম্মুর কাছে থেকে তাদের বাসার আর ছেলের বাবার অফিসের ঠিকানা জেনে নেই।

এরপরে রাতে জোগাড় করা তথ্যগুলো অভিকে টেক্সট করে পাঠিয়ে দিলাম।সে নাকি ছেলের বাবার সাথে অফিসেই দেখা করবে।কালকে এর একটা বিহিত করতেই হবে।হ্রামী ফাহিম্মার এতো বড় কলিজা? আমার পিছনে লাগলে কি হাল হয় এবার বুঝবে।
পরের দিন ভার্সিটিতে গেলাম।ক্লাসরুমে গিয়ে দেখি পিছনের সারিতে বসে আছে।শয়তান, কুত্তা , বিলাই আজকে তোরে খাইছি।মনে মনে ওর চৌদ্দগোষ্ঠি উদ্ধার করে ফেলছি।নাহ্, মাথা গরম করা যাবেনা।ঠান্ডা মাথায় কিছু করতে হবে।তাই ওর পাশেই সিটেই বসলাম।ক্লাসরুমে স্যার আসতে পাঁচমিনিট বাকি আছে।এর মাঝে ওর সাথে আড্ডা জমাতে হবে।
আমি-কি রে কি অবস্থা তোর?
ফাহিম- ভালো, তোর কি খবর?
আমি- একদম ভালো।সাথে একটা সুসংবাদও আছে।
ফামিম- কি খবর? বলে ফেল।কতদিন হলো কোনো সুসংবাদ শুনিনা।
আমি-সামনের সপ্তাহে আমার বিয়ে।
ফাহিম- আরেহ্ বলিস কি? এতো দেখি মহা সুসংবাদ।এই উপলক্ষ্যে কিন্তু তোরে খাওয়াইতেই হবে। কোনো না শুনতে চাইনা।
আমি-আরেহ আস্তে বল, সবাই শুনতে পাবে।তুই খাইতে চেয়েছিস খাবি।কিন্তু অন্যদের আজকে খাওয়াতে পারবোনা।
ফাহিম- আচ্ছা ঠিক আছে। তবে কিন্তু আমি মিস করতে চাইনা।
ফাহিমের অপরপাশে রুমকি বসা ছিলো।আমাদের কথাবার্তা ও কিছুটা শুনেছে।বাকিরা নিজেদের মাঝে আড্ডাতে ব্যস্ত।
রুমকি- কি রে খাওয়ার গন্ধ পাচ্ছি।যেই খাস না ক্যান? আমারে বাদ দিলে খুন করে ফেলবো তোদের দুইজনকে।
ফাহিম- তুই নাকটা ক্যান সুপারগ্লোব দিয়ে বন্ধ করস না?সারাদিনই খাস তো, আর মানুষের কথার মাঝেও সেই গন্ধ খোঁজে পাস।রাক্ষসী কোথাকার । যা শুনেছিস সব গুজব।এসব গুজবে কান দিস না।
আমি- আরে ঝামেলা করিস না।ঠিক আছে তোরা দুইজনেই খাবি।যা বলার পরে ক্যাফে তে বলবো। এখন ক্লাস কর।এরই মাঝে ক্লাসে স্যার চলে আসছে।
ক্যাফেতে ওরা যা খাবে তাই অর্ডার করলাম।রুমকি এর মাঝেই কারনটা জেনে গেছে।ফাহিম , আর রুমকি একপাশে বসতে বললাম।মিশু(আমার বান্ধবী) কে ফোন করে আসতে বলেছি। আমি আর মিশু তাদের সামনে বসেছি।ও না থাকলে পরে শুনলে,রাগে চুল ছিঁড়বে আমার।তাই কোনো রিস্কি নিলাম না।টাকা যাক, ফাহিম্মারে তো সায়েস্তা করতে পারবো। এই সুযোগে আমি কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম খাবার সহ।খাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ক্লাসে চলে গেলাম।
অন্যদিকে অভি তার বন্ধুকে পাঠিয়েছে ছেলের বাবার কাছে।অবশ্য আগে অনুমতি নিয়েছিলো দেখা করার জন্য।
অভির বন্ধু- আংকেল ভিতরে আসবো ?
ছেলের বাবা- হ্যা, আসো। বসো।
অভির বন্ধু- আসলে আংকেল, আপনাকে কিছু কথা বলার ছিলো।ফোনে এতো কথা তো বলা সম্ভব না, তাই সরাসরি বলতে আসলাম।কিন্তু কিভাবে বলবো বুঝতেছিনা।আর আপনিই বা কি মনে করবেন? প্লিজ আংকেল ভুল বুঝবেননা।আমি আপনাদের ভালোর জন্যই এখানে আসছি।
ছেলের বাবা- এতো ভনিতা না করে বলে ফেলো।
অভির বন্ধু-শুনলাম আপনার ছেলের জন্য মেয়ে ঠিক করেছেন।কিন্তু ওই মেয়ের বেপারে ভালো করে খোঁজ খবর নিয়েছেন।
ছেলের বাবা-হ্যা, খোঁজ নিয়েছি তো।মেয়েও আমাদের পছন্দ হয়েছে।কিন্তু কি হয়েছে বলো তো?
অভির বন্ধু- আসলে আংকেল ওই মেয়ের সাথে একটা ছেলের দুই বছরের সম্পর্ক আছে।ওরা নাকি পালিয়ে যাবে বিয়ের আসরেই। যদি আগে পালাতে না পারে। আর বিয়ের আসরে পালাতে না পারলে। বিয়ের পরে হলেও ওরা নাকি পালাবে বাসা থেকে।আমি ওদের কথা শুনেছিলাম। তাই বলতে আসলাম।এখন আপনিই বলেন, এমন মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে আপনার ফুটফুটে ছেলের জীবনটা নষ্ট করবেন?
ছেলের বাবা- কখনোই না।আমার ছেলে চিরকুমার হয়ে থাকলেও এমন মেয়ে ঘরে তুলবোনা।কিন্তু মেয়ের বাবা তো বললো, উনার মেয়ে নাকি বাইরে একদম সময় নষ্ট করেনা।কোনো ছেলের সাথেও নাকি তেমন কথা বলেনা।
অভির বন্ধু- না না , আংকেল।এগুলো সব গুজব, এসব গুজবে কান দিবেন না।ওদের মেয়ে যদি এতোই ভালো হতো, তবে পড়াশুনা শেষ হলেই বিয়ে দিতো।আমি আসি, আমি যা শুনেছি তাই বলে গেলাম।এখন বাকিটা আপনাদের ইচ্ছা।
ছেলের বাবা-তা অবশ্য ঠিক।মেয়ে কে নিজেরা সামলাতে পারেনা বলেই , অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চাচ্ছে।আজকেই না করে দিবো।ঠিক এসো বাবা, বাঁচালে আমাদের।
অভির বন্ধু চলে এসে অভিকে সব খবর জানালো।
অভির সাথে কথা অনেকটা চিন্তা মুক্ত লাগতেছে। তবে পুরোটা চিন্তা মুক্ত হতে পারিনি।কারন ছেলের বাবা তো এখনো আব্বুকে ফোন করেনি। করবে নে, যখন খুশি। আমি আমার কাজ করি।ফাহিমরে তো শায়েস্তা করতে হবে।আম্মুকে একটু দরকারের কথা বলে ফাহিমদের বাসাতে গেলাম।কলিং বেল চাপতেই ফাহিমের মা(
আন্টি) দরজা খুলে দিলেন।
আন্টি- আরে নিতু যে।অনেকদিন ধরে তো আসোই না। কি হয়েছে আসো না যে?
আমি- না না আন্টি কিছু হয়নি, ফাহিম ভিতরে আছে?
আন্টি-ও তো বাসাতে নেই।তুমি ভিতরে আসো।কোনো দরকার আছে?
আমি-তেমন দরকার নেই। গ্রোপস্টাডির জন্য কথা আসছিলাম।
আন্টি-দেখছো ? তোমরা শুধু পড়াশুনা নিয়েই ব্যস্ত।আর আমাদের বান্দরটা সারাদিনই আড্ডাতে ব্যস্ত।
আমি-(এই তো মুক্ষম সুযোগ, এবার আন্টির কানটাও পঁচাতে হবে। এবার বুঝবি ফাহিম্মা নিতু কি?) তা অবশ্য ঠিক।ফাহিম একটু বেশিই আড্ডা দেয়।জানেন আন্টি, ও সব সময় পিছনে বসে।আর সারা ক্লাস কথা বলে।মাঝে মাঝে টিচারও চুপ থাকতে বলে ওরে। ওকে বইলেন একটু সিরিয়াস হতে।এমন হলে তো, রেজাল্ট একদম খারাপ হবে।ও তো আমার বন্ধু , ওর খারাপ টা আমি চাইতে পারিনা।
আন্টি- আমি জানি তুমি অনেক ভালো।আজকেই ওরে ঠিক করবো।বাসাতেও আড্ডা , ভার্সিটিতেও আড্ডা।হয় পড়াশুনা করবে, না হলে আড্ডা দিবে।
আমি-আমি যে কিছু বলছি, ওরে বইলেন না।তাহলে আবার আমার সাথে রাগারাগী করবে।আর কথা বলি আন্টি, ফাহিমকে টাকা পয়সা কম করে দিবেন।
আন্টি- কেন , কি হয়েছে?
আমি-(সেদিনের তুলা ছবি দেখিয়ে)এই দেখেন আন্টি, ও এই রকম মেয়েদের খাওয়ায় প্রতিদিন।আমি প্রায়ই ক্যান্টিনে খেতে যাবার সময়ে দেখি।
আন্টি- তাই তো এতো টাকা লাগে কেন ওর? আজকে আসুক, আজ থেকে টাকা দিবোনা, বাসা থেকে টিফিন বানিয়ে দিবো। গাড়ি ভাড়া , মোবাইলের বিল যা লাগে সব আমি দিবো।এবার দেখবো কি করে এমন বেশি খরচ করে। মাঝে মাঝে ওর ক্লাসেও গিয়ে দেখে আসবো।পিছনে বসা দেখলেই ওর খাবার বন্ধ করে দিবো।
আমি-(বাহ!বাহ! এটাই তো আমি চাই। এবার বুঝবি ফাহিম্মা) ঠিক আছে আন্টি , আপনি যা ভালো মনে করেন , তাই করবেন। আমি শুধু আমার কথা বলা গেলাম।আর একটা কথা বলতে ভুলে গেছি, আপনাকে কিন্তু আজকে অনেক সুন্দর লাগতেছে।কাহিনী কি বলুন তো? (পাম দিতে একটু প্রসংশা করা)
আন্টি-ওই আর কি ? আজকে একটু পার্লারে গিয়েছিলাম ।(আমি জানি উনি নিয়মিত পার্লারে যান, সিরিয়াল দেখে , সেই রূপচর্চার পর্বও মিস করেন না)
আমি- খুবই ভালো।মাঝে মাঝেই যাবেন।দেখেছেন , কেমন স্মার্ট স্মার্ট লাগতেছে আপনাকে।আজকে আসি আন্টি।
আন্টি-আরেহ এখনি যাবে ?চা খাবেনা ?বসো বসো আমি চা আনতেছি।
এরপরে চা খেয়ে আমাদের বাসাতে ফিরে এলাম।
বাসা তে পা রাখতেই দেখি আব্বু রাগারাগী করতেছে।এরপরে আম্মুর কাছে শুনলাম, ছেলের বাবা নাকি বলেছে মেয়ে ভালো না।অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে, পালিয়ে যাবে। এই রকম হাবি জাবি কথা বলেছে। আমাকে দেখে আব্বু ডাকলো-
আব্বু-নিতু এই দিকে আয়।তুই কার সাথে পালাবি ? এতো বড় সাহস তোর?তোকে বড় করেছি এইসব কথা শুনার জন্য?বাপ মার মুখে চুনকালী মাখতে চাস?পালানোর দরকার নেই।তোর যদি কোনো রাস্তার ছেলেও পছন্দ থাকে। তাহলে বলিস, আমি তোকে ওর হাতেই তুলে দিবো। তবুও আমাদের মাথা নত করিস না সমাজের কাছে।
(আব্বু কথা গুলো প্রায়ই এক নি:শ্বাসেই বললো।মুখে দিকে তাকিয়ে দেখলাম, অনেক কষ্ট পাচ্ছে।এই মুহূর্তে কি বলা উচিত্‍ বুঝতে পারছিনা।কিন্তু অভির সাথে তো পালাতে চাইনি। এটা সত্য যেমন, তেমন ওকে ছাড়া অন্য কাউকে ভাবতে পারি না এটাও সত্য।কিন্তু এখন আব্বুকে অভির কথাও বলা যাবেনা। তাহলে আব্বু আরও কষ্ট পাবে।যেই পরিমাণ আমাকে বিশ্বাস করতো, সেই পরিমাণ ঘৃণাও জমাতে পারে।এতক্ষণ চুপ করে ভাব ছিলাম, আব্বুর ডাকে ভাবনার জগত্‍ থেকে ফিরলাম।)
কি রে কথা বলছিস না কেন?
আমি-বিশ্বাস করো আমি কারো সাথে পালাতে চাই নি।
TUE 10:28PM
আব্বু- তাহলে ছেলের বাবা বললো কি করে?
আমি-তা আমি কি করে জানবো? সবই গুজব , এসব কথাতে কান দিবেননা প্লিজ।আমি কারো সাথে কেনই বা পালাবো? আর আমি ভালোভাবেই অনার্সটা শেষ করতে চাই।
আব্বু- ঠিক আছে।কিন্তু আমি যেন তোর নামে কারো কাছে থেকে কোনো প্রকাশ কটু কথা না শুনি। যদি শুনি তাহলে তোকে কখনোই ক্ষমা করবো না। আর তোর যদি কাউকে ভালো লেগেই থাকে।তাহলে আমাকে বলিস , সে রাস্তার ছেলে হলেও আমি তোকে তার হাতে তুলে দিবো। তবুও আমাদের মুখে চুনকালি মাখিস না। সমাজের কাছে মাথা নত করিস না।আমি তোকে বিশ্বাস করি, সেই বিশ্বাসে অমর্যাদা করবি না। কথা টা যেন মাথাতে থাকে।
এটা বলেই আব্বু চলে গেলো।আমি জানি আব্বু অভির বেপারে জানেনা।আম্মু শুধু জানে কারো সাথে কথা বলছি। যেটুকু ফাহিম বলেছে। আম্মু আব্বুকে পাত্র খোঁজতে বললেও অন্য কিছু যে বলবে না সেটা ভালো করেই জানি। এই দিকে আমার অনার্স শেষ হলে অভিরও চাকরীর একবছর পূরণ হবে। ততদিনে সে নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারবে।আমার বিশ্বাস এক বছর পরে অভি নিজেই আসবে আব্বুর কাছে তার অভিভাবকদের নিয়ে।এসব ছাইপাশ ভাবতে ভাবতে রুমে চলে এলাম।অভিকে বিয়ে ভাঙ্গার কথা টা জানালাম। উফ , অনেকটাই শান্তি লাগতেছে।পরের দিন ক্লাস করতে গেলাম।
গিয়ে দেখি ফাহিম বসে আছে সামনের সারিতে।আমি গিয়ে ওর পাশেই বসলাম।আমার দিকে রাগী মুডে তাকালো,
ফাহিম- ওই শাকচুন্নী, এতোক্ষণে আসছিস?
আমি- কেনো কি হয়েছে ?
ফাহিম- কি হয়েছে? ইচ্ছা করতেছে তোকে খুন করে ফেলি।তুই আম্মুকে কি সব বলছিস?
আমি- তুই যেমনটা আমার আম্মুকে বলেছিলি, তেমনটাই আমিও আন্টিকে বলেছি।পার্থক্য হলো, তুই সত্য বলছিস ।আর আমি মিথ্যা বলছি।তাতে কি হয়েছে? তুই আমার পিছে লাগবি , আর আমি তোকে ছেড়ে দিবো ভেবেছিস? ভুল ভেবেছিস চান্দু।এরপরে যদি আবার লাগিস, এর বেশি মিথ্যা বলে তোকে শায়েস্তা করবো।
ফাহিম- মাফ চাই বইনা(বোন)।তুই যা খুশি কর , আমি আর কাউকে কিচ্ছু বলবো না।তবুও প্লিজ আমার হাত খরচের টাকাটা বন্ধ করিসনা।আর আম্মুরে আমার পিছে লাগাস না।
আমি- ঠিক আছে। আমি সব ব্যবস্থা করে দিবো আবার।কিন্তু তোকে আম্মুর কাছে বলতে হবে, সেদিন তুই এক বন্ধুর সাথে দেখেছিস আমাকে।কোনো দরকারে কথা বলছিলাম চা খেতে খেতে। বলতে পারবিনা?
ফাহিম- পারবোনা মানে? অবশ্যই পারবো।তবে সেই ছেলেটা কে আগে বল।
অভির কথা ফাহিমকে বললাম।এরপরে ফাহিমও আম্মুকে এসে বলেছিলো।তারপরে আর আম্মু সন্দেহ করেনি।আমিও ফাহিমের আম্মুকে লেকচার শীট, এসাইনমেন্টের জন্য টাকা লাগবে। সেগুলো বলে ফাহিমের হাতখরচের টাকাও ফিরিয়ে দিলাম।
অত:পর ভাবলো ভাবেই চলছে , আমাদের গুজবহীন সম্পর্ক।দোয়া করবেন আমাদের জন্য একবছর পরে যেন দাওয়াত দিতে পারি।আর হ্যা , এর মাঝে কোনো গুজবে কান দিবেননা, যে আমরা বিয়ে করে ফেলেছি :p।


                                                             ****সমাপ্ত***

কেন এমন হয় জোনাকী আক্তার ************************** ভাঙা গড়ার খেলায় নিজেকে বারবার গড়ি, দু:খ-সুখের ভেলায় ঘুম ভাঙার মতই কেটে যায় সুখের রেশ...